রাজধানীর এসি কেন খারাপ,
তদন্তের নির্দেশ দিলেন অধীর
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা
শনিবার
শিয়ালদহগামী রাজধানী এক্সপ্রেসের
একটি...
more... কামরায় বাতানুকূল
যন্ত্রের ত্রুটি কেন সারা রাত
সারানো গেল না,
তা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ
দিলেন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর
চৌধুরী। শুধু ওই কামরার কিছু
যাত্রীই প্যান্ট্রিকারের
খাবার খেয়ে কী ভাবে অসুস্থ
হয়ে পড়লেন, তা নিয়েও তদন্ত
হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইতিমধ্যেই ওই খাবারের
নমুনাও সংগ্রহ
করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন
অধীর।
শনিবার
শিয়ালদহগামী রাজধানী এক্সপ্রেসে দুর্ভোগের
শিকার হন একটি কামরার
যাত্রীরা।
ভুক্তভোগী যাত্রীদের অভিযোগ,
বি ১১ কামরায় প্রথম থেকেই
এসি বিকল ছিল।
এমনকী যাত্রীদের
দেওয়া খাবারের মানও ছিল
কুৎসিত। ওই খাবার
খেয়ে কয়েক জন যাত্রী অসুস্থ
হয়ে পড়েন বলেও অভিযোগ।
রবিবার
দুপুরে ট্রেনটি শিয়ালদহে পৌঁছলে আত্মীয়স্বজনের
সামনে ক্ষোভ উগরে দেন বি ১১
কামরার যাত্রীরা। তাঁদের
অভিযোগ, কানপুর
স্টেশনে শনিবার রাতেই
বিক্ষোভ দেখান ওই কামরার
যাত্রীরা। রেল সূত্রে বলা হয়,
বিক্ষোভের
জেরে কানপুরে ট্রেনটি শনিবার
রাতে প্রায় আড়াই
ঘণ্টা আটকে ছিল।
শিয়ালদহ রাজধানীর বি ১১
কামরা থেকে নামানো হচ্ছে এক অসুস্থ
যাত্রীকে। —নিজস্ব চিত্র
রবিবার বেলা ১১ টা ৪০
মিনিটে ট্রেনটি শিয়ালদহ
স্টেশনে এসে পৌঁছালে বি ১১
কামরার যাত্রীদের একাংশ
ফের বিক্ষোভ দেখান।
বণার্লী কর, জয়া দাস, উজ্জ্বল
রায়দের অভিযোগ, এত গোলমাল
থাকা সত্ত্বেও রেল কর্তৃপক্ষ
তাঁদের সঙ্গে কোনও
সহযোগিতা করেননি। বারবার
বলা সত্ত্বেও চিকিৎসকের
ব্যবস্থাও করা হয়নি। উপরন্তু
কানপুর
স্টেশনে বিক্ষোভকারীদের
গায়েও আরপিএফ হাত দিয়েছে।
তবে বি ১১ কামরার অনেক
যাত্রী বর্ণালী দেবী,
জয়া দাসদের অভিযোগ
পুরোপুরি মানতে চাননি।
নয়ডার
বাসিন্দা মন্দিরা আচার্য
এবং আগরতলার দিব্যতনু
চট্টোপাধ্যায় বলেন, কামরায়
এসি পুরো বন্ধ না থাকলেও,
যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল। তাই
প্রথম থেকেই
ঠান্ডা কিছুটা কম হচ্ছিল।
তার মধ্যে কামরায় অতিরিক্ত
যাত্রী ছিলেন। তাতে গরম
লেগেছে বেশি।
কিন্তু ওই সংরক্ষিত কামরায়
বেশি যাত্রী উঠলেন
কী ভাবে?
রেল কর্তৃপক্ষের
পাল্টা অভিযোগ,
দিল্লি থেকে একটি বড় দল
কলকাতায় আসছিল। তাঁদের আসন
সংরক্ষণ ছিল বি ১১, বি ৬ ও
বি ৪ কামরায়। কিন্তু ওই
যাত্রীরা সবাই ভিড়
জমিয়ে ছিলেন বি ১১
কামরায়। খাবার দেওয়ার সময়
তাঁদের নিজেদের
আসনে গিয়ে বসতে বলা হলেও
তাঁরা যাননি। উল্টে এই
নিয়ে বচসা বাধিয়ে দেন
প্যান্ট্রিকারের কর্মীদের
সঙ্গে।
শনিবার প্যান্ট্রিকারের
সরবরাহ করা খাবারের
মধ্যে দই খারাপ ছিল
বলে অভিযোগ জয়া দাসদের।
তবে দিব্যতনুবাবুরা বলেন,
“কামরায় অনেকেই দই
খেয়েছিলেন। কিন্তু অসুস্থ
হয়েছেন ৮-৯ জন। তাঁদের কেউ
কেউ বমিও করেন। তাঁদের কেউ
কেউ আবার কন্টিনেন্টাল
খাবার নিয়ে সঙ্গে জোর
করে দই নিয়েছেন।”
রাজধানীর এই বি ১১ কোচের
মধ্যে ওই
দলে সঙ্গীতশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তীর
স্ত্রী-ও ছিলেন। এ দিন
স্ত্রীকে নিতে শিয়ালদহ
স্টেশনে এসেছিলেন
নচিকেতা। তিনি বলেন,
“কামরায় এসি চলছে না।
খাবার খেয়ে যাত্রীরা অসুস্থ
হয়ে পড়েছেন। রেল কোনও
ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
শনিবার রাত ১১টা নাগাদ এই
খবর পাই। তারপর থেকে আর
ঘুমোতে পারিনি।”
রাজধানী এক্সপ্রেস শিয়ালদহ
স্টেশনে পৌঁছালে অন্য
যাত্রীদের সঙ্গে তিনিও
বিক্ষোভে সামিল হন। তাঁর
প্রশ্ন, “ভাড়া বাড়ালেও
পরিষেবা বাড়বে না কেন?”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
রেলমন্ত্রী থাকার
সময়ে নচিকেতা ছিলেন রেলের
স্বাচ্ছন্দ্য কমিটির সদস্য।
রাজধানীর বি ১১ কামরার
যাত্রীদের দুই ধরনের
বয়ানে রেল-
কর্তারা কিছুটা বিভ্রান্ত।
রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর
চৌধুরী বলেছেন, “এসি খারাপ
হওয়াটা যান্ত্রিক ত্রুটি।
যে কোনও সময় হতে পারে। ওই
কামরায় ঠিক কী হয়েছিল, কত
জন যাত্রী ছিলেন,
খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রয়োজনে ওই কামরার
যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদও
করতে পারে রেল।”
প্রতিমন্ত্রীর প্রশ্ন, “একই
প্যান্ট্রিকারের খাবার সব
যাত্রী খেয়েছেন, হঠাৎ
একটা কামরার কয়েক জন অসুস্থ
হলেন কেন, সেটাও
দেখা হচ্ছে।”